ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়েট

- আপডেট সময় ০১:০১:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
- / ৯১ বার পড়া হয়েছে
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর ডায়েট
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ক্ষতি করতে পারে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে এবং জীবনধারা পরিবর্তন করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই লেখায় আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. ডায়াবেটিস ও পুষ্টির সম্পর্ক
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা এমন হতে হবে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখবে এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে। প্রধানত তিনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট – প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, এবং ফ্যাট – সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
প্রোটিন
প্রোটিন ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। উৎস:
- মুরগির মাংস
- মাছ
- ডাল ও ছোলা
- বাদাম ও বীজ
- ডিমের সাদা অংশ
স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট
কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার ধীরে শক্তি সরবরাহ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। উৎস:
- বাদামি চাল
- ওটস
- শাকসবজি
- ডাল
- ফল (কম চিনি যুক্ত যেমন: আপেল, নাশপাতি, বেরি)
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
ভালো ফ্যাট শরীরের জন্য উপকারী এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। উৎস:
- অলিভ অয়েল
- বাদাম ও আখরোট
- চিয়া ও ফ্ল্যাক্স সিড
- অ্যাভোকাডো
২. ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণের কৌশল
ক্যালোরি হিসাব করে খাবার গ্রহণ
ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত ওজন হওয়া উচিত নয়। তাই দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণ নির্ধারণ করে খাবার খাওয়া উচিত।
বারবার ছোট খাবার গ্রহণ
- ৩টি প্রধান খাবারের পরিবর্তে ৫-৬টি ছোট খাবার খান।
- এতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাবার তালিকা
সকালের নাস্তা (Breakfast)
- ওটস ও বাদামের মিশ্রণ
- ডিমের সাদা অংশ
- গ্রিক দই ও বেরি ফল
- সবুজ চা বা ব্ল্যাক কফি
মধ্যাহ্নভোজ (Lunch)
- বাদামি চাল বা রুটি
- মাছ বা মুরগির মাংস
- শাকসবজি ও সালাদ
- ডাল
বিকেলের নাস্তা (Evening Snack)
- বাদাম ও চিয়া সিড
- ডাবের পানি
- গ্রিন টি
রাতের খাবার (Dinner)
- গ্রিলড ফিশ বা চিকেন
- ভেজিটেবল সালাদ
- হালকা স্যুপ
- চিয়া সিড পানীয়
৪. কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন
উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার
- সাদা চাল ও ময়দার তৈরি খাবার
- মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার
- সফট ড্রিংক ও প্যাকেটজাত জুস
- মিষ্টি দই ও আইসক্রিম
প্রসেসড ও ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার
- ফাস্ট ফুড
- ডিপ ফ্রাই করা খাবার
- কেক, বিস্কুট
- বনস্পতি ঘি
৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ২.৫-৩ লিটার পানি পান করা উচিত। পানি শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বের করে দেয়।
কৌশল:
- খাবারের আগে এক গ্লাস পানি পান করুন।
- কোল্ড ড্রিংকের পরিবর্তে ডিটক্স ওয়াটার পান করুন।
- ডাবের পানি পান করুন, তবে অতিরিক্ত না।
৬. শারীরিক কার্যক্রম ও ব্যায়াম
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েটের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কার্যকর ব্যায়াম:
- কার্ডিও: হাঁটা, সাইক্লিং, জগিং
- স্ট্রেংথ ট্রেনিং: হালকা ওজন তোলা, স্কোয়াট
- যোগব্যায়াম: মানসিক প্রশান্তি ও মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব
পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক স্বাস্থ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম কম হলে কর্টিসল হরমোন বেড়ে যায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
ঘুমের নিয়ম:
- প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
- মোবাইল ও স্ক্রিন টাইম কমিয়ে ঘুমানোর আগে রিল্যাক্স করুন।
- মেডিটেশন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
➤ জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর Food Quality Control Level-৩ CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট করতে – ক্লিক করুন
বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি এর ফেসবুক পেজ, কমিউনিটি গ্রুপ অথবা ওয়েবসাইট ও গ্রুপ থেকে।