০৭:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Natore Technical Training Centre)

bdskills Team
  • আপডেট সময় ১১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৯ বার পড়া হয়েছে

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: দক্ষতা বিকাশের এক আধুনিক প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা অপরিহার্য। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ওঠা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) একটি এমনই প্রতিষ্ঠান, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা মেটাতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা ও পেশাগত জ্ঞান প্রদান করছে। নাটোরের যুবসমাজের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি দক্ষতা বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিষ্ঠানের পটভূমি

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি নাটোর জেলার একটি প্রধান কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশের উত্তরাঞ্চলের এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞান এবং দক্ষতা প্রদান করা, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে।

এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং তার পর থেকে নাটোর জেলার তরুণদের জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং পেশাদারী দক্ষতা অর্জনের একটি প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে আসছে। নাটোর টিটিসি কারিগরি শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবসমাজকে স্বাবলম্বী করতে চায় এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখতে চায়।

কোর্স ও প্রশিক্ষণের বিবরণ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিভিন্ন ধরণের পেশাগত এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদান করে। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দেয়, যা তাদের ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রে সফল হতে সহায়ক হয়। প্রধান কোর্সগুলো হলো:

1. ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স মেইনটেনেন্স: এই কোর্সটি শিক্ষার্থীদের ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম এবং ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের দক্ষতা প্রদান করে। বর্তমান যুগে ইলেকট্রনিক্সের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রশিক্ষণ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।

2. অটোমোবাইল মেকানিক্স: যানবাহনের ইঞ্জিন এবং অন্যান্য যান্ত্রিক অংশের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দক্ষতা অর্জনের জন্য এই কোর্সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অটোমোবাইল সেক্টরে কাজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, এবং এই কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় গ্যারেজ ও সার্ভিস সেন্টারে কাজের সুযোগ পায়।

3. ওয়েল্ডিং এবং ফেব্রিকেশন: এই কোর্সটি ধাতব পদার্থের সংযোগ এবং কনস্ট্রাকশন সংক্রান্ত কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়। শিল্পখাতে ওয়েল্ডিং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা, যা নির্মাণ শিল্পে ব্যাপকভাবে প্রয়োজন।

4. রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং (RAC): রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের ইনস্টলেশন ও মেরামতের দক্ষতা অর্জনের জন্য এই কোর্সটি অত্যন্ত কার্যকর। বাড়ি, অফিস, এবং শিল্পকারখানায় রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের ব্যাপক চাহিদা থাকায়, এই প্রশিক্ষণ কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ সহায়ক।

5. কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি: এই কোর্সে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার পরিচালনা, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, এবং আইটি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে আইটি দক্ষতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা, যা শিক্ষার্থীদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম করে।

শিক্ষণ পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এখানে শিক্ষার্থীদের বাস্তব প্রশিক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ল্যাব এবং ওয়ার্কশপ সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের দক্ষতা উন্নত করতে পারে, যা তাদের বাস্তব কাজের জন্য প্রস্তুত করে।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষণ পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। এখানে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করে থাকেন। তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও এখানে সমান গুরুত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে উন্নতমানের ক্লাসরুম, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ল্যাবরেটরি এবং গ্রন্থাগার।

আরও পড়ুন- রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: দক্ষ জনশক্তি তৈরির এক নতুন দিগন্ত

কর্মসংস্থানের সুযোগ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র স্থানীয় নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও কাজ করার সুযোগ পায়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দক্ষ শ্রমশক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নাটোর টিটিসি থেকে সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, আইটি এবং নির্মাণ সেক্টরে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে থাকে।

বাংলাদেশে নির্মাণ, গার্মেন্টস, এবং আইটি খাতেও নাটোর টিটিসির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে অনেকে নিজের ব্যবসা শুরু করে, যা তাদের জন্য একটি ভালো আয়ের উৎস হতে পারে।

সরকারি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

বাংলাদেশ সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও সরকারের এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন বিশ্বব্যাংক, আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা), এবং জাইকার (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) সহায়তায় নাটোর টিটিসিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ লাভ করে, যা তাদের স্থানীয় এবং বৈশ্বিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন প্রশিক্ষণ সরঞ্জামের আধুনিকায়ন এবং প্রশিক্ষকদের দক্ষতার উন্নয়ন। তবে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন কোর্স এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়।

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিত্ব ও নৈতিক মানোন্নয়নে কাজ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এবং যুবসমাজকে স্বাবলম্বী করতে এই প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

➤  নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে- ক্লিক করুন

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Natore Technical Training Centre)

আপডেট সময় ১১:১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: দক্ষতা বিকাশের এক আধুনিক প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা অপরিহার্য। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ওঠা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) একটি এমনই প্রতিষ্ঠান, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা মেটাতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা ও পেশাগত জ্ঞান প্রদান করছে। নাটোরের যুবসমাজের জন্য এই প্রতিষ্ঠানটি দক্ষতা বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিষ্ঠানের পটভূমি

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি নাটোর জেলার একটি প্রধান কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশের উত্তরাঞ্চলের এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞান এবং দক্ষতা প্রদান করা, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়ক হবে।

এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং তার পর থেকে নাটোর জেলার তরুণদের জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং পেশাদারী দক্ষতা অর্জনের একটি প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে আসছে। নাটোর টিটিসি কারিগরি শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবসমাজকে স্বাবলম্বী করতে চায় এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখতে চায়।

কোর্স ও প্রশিক্ষণের বিবরণ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বিভিন্ন ধরণের পেশাগত এবং কারিগরি প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদান করে। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দেয়, যা তাদের ভবিষ্যত কর্মক্ষেত্রে সফল হতে সহায়ক হয়। প্রধান কোর্সগুলো হলো:

1. ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স মেইনটেনেন্স: এই কোর্সটি শিক্ষার্থীদের ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম এবং ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের দক্ষতা প্রদান করে। বর্তমান যুগে ইলেকট্রনিক্সের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রশিক্ষণ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর।

2. অটোমোবাইল মেকানিক্স: যানবাহনের ইঞ্জিন এবং অন্যান্য যান্ত্রিক অংশের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দক্ষতা অর্জনের জন্য এই কোর্সটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অটোমোবাইল সেক্টরে কাজের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, এবং এই কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় গ্যারেজ ও সার্ভিস সেন্টারে কাজের সুযোগ পায়।

3. ওয়েল্ডিং এবং ফেব্রিকেশন: এই কোর্সটি ধাতব পদার্থের সংযোগ এবং কনস্ট্রাকশন সংক্রান্ত কাজের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়। শিল্পখাতে ওয়েল্ডিং একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা, যা নির্মাণ শিল্পে ব্যাপকভাবে প্রয়োজন।

4. রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং (RAC): রেফ্রিজারেশন এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের ইনস্টলেশন ও মেরামতের দক্ষতা অর্জনের জন্য এই কোর্সটি অত্যন্ত কার্যকর। বাড়ি, অফিস, এবং শিল্পকারখানায় রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের ব্যাপক চাহিদা থাকায়, এই প্রশিক্ষণ কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ সহায়ক।

5. কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি: এই কোর্সে শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার পরিচালনা, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, এবং আইটি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে আইটি দক্ষতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয়তা, যা শিক্ষার্থীদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম করে।

শিক্ষণ পদ্ধতি ও সুযোগ-সুবিধা

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে কাজ শেখানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এখানে শিক্ষার্থীদের বাস্তব প্রশিক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ল্যাব এবং ওয়ার্কশপ সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের দক্ষতা উন্নত করতে পারে, যা তাদের বাস্তব কাজের জন্য প্রস্তুত করে।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষণ পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর। এখানে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের শেখানোর জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করে থাকেন। তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও এখানে সমান গুরুত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে উন্নতমানের ক্লাসরুম, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ল্যাবরেটরি এবং গ্রন্থাগার।

আরও পড়ুন- রাজশাহী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র: দক্ষ জনশক্তি তৈরির এক নতুন দিগন্ত

কর্মসংস্থানের সুযোগ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র স্থানীয় নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও কাজ করার সুযোগ পায়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দক্ষ শ্রমশক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নাটোর টিটিসি থেকে সনদপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, আইটি এবং নির্মাণ সেক্টরে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে থাকে।

বাংলাদেশে নির্মাণ, গার্মেন্টস, এবং আইটি খাতেও নাটোর টিটিসির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে অনেকে নিজের ব্যবসা শুরু করে, যা তাদের জন্য একটি ভালো আয়ের উৎস হতে পারে।

সরকারি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

বাংলাদেশ সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও সরকারের এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন বিশ্বব্যাংক, আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা), এবং জাইকার (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) সহায়তায় নাটোর টিটিসিতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ লাভ করে, যা তাদের স্থানীয় এবং বৈশ্বিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন প্রশিক্ষণ সরঞ্জামের আধুনিকায়ন এবং প্রশিক্ষকদের দক্ষতার উন্নয়ন। তবে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন কোর্স এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়।

নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের ব্যক্তিত্ব ও নৈতিক মানোন্নয়নে কাজ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে এবং যুবসমাজকে স্বাবলম্বী করতে এই প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

➤  নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে- ক্লিক করুন

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?