০১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

মোঃ আব্দুল আজিজ মোল্লা
  • আপডেট সময় ১২:৩৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ২০৬ বার পড়া হয়েছে

নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান, যা দেশের জনশক্তিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে কাজ করে। দক্ষতা বৃদ্ধির বিভিন্ন ক্ষেত্রে NSDA বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশন প্রদান করে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ হলো ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ (Driving Skill Level 3)। এই কোর্সের আওতায় ড্রাইভিং সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখানো হয়, যার মধ্যে নিরাপদ গাড়ি চালানো, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, এবং পার্কিং সম্পর্কিত নিয়মাবলী শেখানো হয়।

পার্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা যে কোনও দক্ষ ড্রাইভারের জন্য অপরিহার্য। সঠিকভাবে পার্কিং করতে না পারলে শুধু ট্রাফিক আইন লঙ্ঘিত হয় না, বরং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩-এর একটি মৌলিক অংশ হল পার্কিং নিয়মাবলী। নিচে এই নিয়মাবলীর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো:

 ১. নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ কোর্সে নিরাপদ পার্কিংয়ের জন্য কিছু মৌলিক নিয়মাবলী শেখানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে:

– গাড়ির অবস্থান সঠিক করা: পার্ক করার সময় নিশ্চিত করতে হবে যে গাড়িটি সঠিকভাবে লেনের মধ্যে রয়েছে এবং অন্য যানবাহন বা পথচারীদের জন্য কোনও বাধা সৃষ্টি করছে না।

– গাড়ির স্থিতিশীলতা: গাড়ি পার্ক করার সময় হাত ব্রেক (হ্যান্ড ব্রেক) ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ঢালু জায়গায় পার্কিং করার সময় এটি বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। হাত ব্রেক গাড়ির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে এবং গাড়ির অপ্রত্যাশিত চলাচল রোধ করে।

– দূরত্ব বজায় রাখা: পার্কিং করার সময় অন্যান্য গাড়ি থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে পার্শ্ববর্তী গাড়ির চালকরা তাদের গাড়ি স্বাচ্ছন্দ্যে স্থানান্তর করতে পারেন।

 ২. বিভিন্ন ধরণের পার্কিং এবং কৌশল

পার্কিং-এর বিভিন্ন ধরণের কৌশল শেখানো হয় যা ড্রাইভারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের পার্কিং-এর মধ্যে রয়েছে:

– প্যারালেল পার্কিং (Parallel Parking): সরু জায়গায় পার্ক করার জন্য এই কৌশলটি অত্যন্ত কার্যকর। এর মাধ্যমে রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট একটি স্থানে গাড়ি পার্ক করা হয়। প্যারালেল পার্কিংয়ের সময় রাস্তার গাড়ি থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে সোজা থাকা প্রয়োজন।

– অ্যাঙ্গেল পার্কিং (Angle Parking): এই ধরনের পার্কিং সাধারণত শপিং মল বা পাবলিক পার্কিং এলাকায় ব্যবহৃত হয়, যেখানে গাড়িগুলো নির্দিষ্ট কোণে পার্ক করা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে সহজ হলেও, পার্শ্ববর্তী গাড়ির সাথে দূরত্ব ঠিক রাখার বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

– পেন্ডুলাম পার্কিং: সরু পার্কিং স্পেসে ঢোকার জন্য এই কৌশলটি ব্যবহৃত হয়। পেন্ডুলাম স্টাইলে গাড়িকে সামনের দিকে নিয়ে গিয়ে পরে পিছনের দিকে ঠিকভাবে সরিয়ে পার্কিং করা হয়।

– স্ট্রেইট পার্কিং (Straight Parking): পার্কিং করার সবচেয়ে সাধারণ এবং সহজ কৌশল এটি। পার্কিং স্পটের সামনে গাড়ি নিয়ে সরাসরি প্রবেশ করানো হয়।

 ৩. ট্রাফিক আইন এবং পার্কিং

পার্কিং-এর সময় ট্রাফিক আইন মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সাধারণ পার্কিং সম্পর্কিত ট্রাফিক আইনের মধ্যে রয়েছে:

– নো পার্কিং জোন: নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়, যেগুলো সাধারণত ট্রাফিকের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত হয়। যেমন হাসপাতালের প্রবেশপথ, স্কুলের সামনে, ফায়ার স্টেশন ইত্যাদির আশেপাশে পার্কিং করা নিষিদ্ধ।

– ট্রাফিক সংকেত মেনে চলা: পার্কিং করতে হলে ড্রাইভারদের ট্রাফিক সংকেত এবং চিহ্নগুলো অনুসরণ করতে হবে। যেখানে “নো পার্কিং” সাইন দেওয়া থাকে, সেখানে গাড়ি পার্ক করা যাবে না। এছাড়া কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ে পার্কিং নিষিদ্ধ থাকে, সেই সময়সূচি অনুযায়ী পার্কিং করতে হবে।

– হুইলচেয়ার এক্সেসিবল পার্কিং: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত পার্কিং স্পট ব্যবহার করা উচিত নয় যদি আপনি অনুমোদিত না হন। এটি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন এবং অন্যদের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

 ৪. পার্কিং-এর নিরাপত্তা

পার্কিং-এর সময় শুধু ট্রাফিক আইনই নয়, নিরাপত্তা বিধিও মেনে চলতে হবে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা নিয়মাবলী হলো:

– গাড়ির দরজা লক করা: পার্কিং-এর পর গাড়ির সব দরজা ও জানালা ঠিকমতো লক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি গাড়ি চুরির ঝুঁকি কমায়।

– দ্রুত পার্কিং এড়ানো: তাড়াহুড়ো করে গাড়ি পার্ক করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ধীরে এবং সঠিকভাবে পার্কিং করা উচিত।

– অন্ধ স্থানগুলোতে খেয়াল রাখা: পার্কিং করার সময় ড্রাইভারদের অন্ধ স্থানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাইড মিরর এবং রিয়ার ভিউ মিররের পাশাপাশি, পার্কিং সেন্সর বা ক্যামেরার সাহায্য নিতে পারেন।

 ৫. পার্কিং-সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি

কখনও কখনও পার্কিং করার সময় ড্রাইভাররা কিছু জরুরি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ:

– ব্রেক ফেইল হওয়ার ঝুঁকি: যদি পার্ক করার সময় গাড়ির ব্রেক কাজ না করে, তাহলে গাড়ির হাত ব্রেক ব্যবহার করে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা উচিত।

– পার্কিং স্পেস না পাওয়া: ট্রাফিক এলাকায় কখনও কখনও পার্কিং স্পেস পাওয়া কঠিন হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ড্রাইভারদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা উচিত এবং অনুমোদিত জায়গায় পার্কিং করা উচিত।

 ৬. পরিবেশ এবং স্থানীয় নিয়মাবলী

পার্কিং-এর ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং স্থানীয় নিয়মাবলীও ড্রাইভারদের মাথায় রাখতে হবে। যেমন:

– ইঞ্জিন বন্ধ রাখা: পার্ক করার পর ইঞ্জিন বন্ধ রাখা উচিত। ইঞ্জিন চালু রাখা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং অপ্রয়োজনীয় জ্বালানি অপচয় ঘটায়।

– পার্কিং ফি মেনে চলা: যেসব এলাকায় পার্কিং ফি নির্ধারিত রয়েছে, সেগুলোতে ফি প্রদান করতে হবে। অনেক এলাকায় অনুমোদনবিহীন পার্কিংয়ের জন্য জরিমানা ধার্য করা হয়, যা এড়ানোর জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ কোর্সে পার্কিং সম্পর্কিত এই নিয়মাবলী শেখানোর মাধ্যমে একজন ড্রাইভারকে সঠিকভাবে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সঠিকভাবে পার্কিং করতে পারা একটি দক্ষ ড্রাইভারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী। এটি শুধু ড্রাইভারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না, বরং অন্যদের জন্যও ট্রাফিক ব্যবস্থা সহজ করে তোলে।

 

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ড্রাইভিং স্কিল লেভেল-৩ CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোঃ আব্দুল আজিজ মোল্লা

আসসালামুয়ালাইকুম আমি মোঃ আব্দুল আজিজ মোল্লা । একজন ড্রাইভিং প্রশিক্ষক ও এসেসর। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) কর্তৃক, স্কিল লেভেল-৩ সম্পন্ন করেছি। bdskills.org স্কিলস কন্টেন্ট প্লাটফরমে আমি শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং লেভেল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

আপডেট সময় ১২:৩৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান, যা দেশের জনশক্তিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে কাজ করে। দক্ষতা বৃদ্ধির বিভিন্ন ক্ষেত্রে NSDA বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশন প্রদান করে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ হলো ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ (Driving Skill Level 3)। এই কোর্সের আওতায় ড্রাইভিং সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখানো হয়, যার মধ্যে নিরাপদ গাড়ি চালানো, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, এবং পার্কিং সম্পর্কিত নিয়মাবলী শেখানো হয়।

পার্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা যে কোনও দক্ষ ড্রাইভারের জন্য অপরিহার্য। সঠিকভাবে পার্কিং করতে না পারলে শুধু ট্রাফিক আইন লঙ্ঘিত হয় না, বরং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩-এর একটি মৌলিক অংশ হল পার্কিং নিয়মাবলী। নিচে এই নিয়মাবলীর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো:

 ১. নিরাপদ পার্কিং এর মৌলিক নিয়মাবলী

ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ কোর্সে নিরাপদ পার্কিংয়ের জন্য কিছু মৌলিক নিয়মাবলী শেখানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে:

– গাড়ির অবস্থান সঠিক করা: পার্ক করার সময় নিশ্চিত করতে হবে যে গাড়িটি সঠিকভাবে লেনের মধ্যে রয়েছে এবং অন্য যানবাহন বা পথচারীদের জন্য কোনও বাধা সৃষ্টি করছে না।

– গাড়ির স্থিতিশীলতা: গাড়ি পার্ক করার সময় হাত ব্রেক (হ্যান্ড ব্রেক) ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ঢালু জায়গায় পার্কিং করার সময় এটি বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। হাত ব্রেক গাড়ির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে এবং গাড়ির অপ্রত্যাশিত চলাচল রোধ করে।

– দূরত্ব বজায় রাখা: পার্কিং করার সময় অন্যান্য গাড়ি থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে পার্শ্ববর্তী গাড়ির চালকরা তাদের গাড়ি স্বাচ্ছন্দ্যে স্থানান্তর করতে পারেন।

 ২. বিভিন্ন ধরণের পার্কিং এবং কৌশল

পার্কিং-এর বিভিন্ন ধরণের কৌশল শেখানো হয় যা ড্রাইভারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের পার্কিং-এর মধ্যে রয়েছে:

– প্যারালেল পার্কিং (Parallel Parking): সরু জায়গায় পার্ক করার জন্য এই কৌশলটি অত্যন্ত কার্যকর। এর মাধ্যমে রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট একটি স্থানে গাড়ি পার্ক করা হয়। প্যারালেল পার্কিংয়ের সময় রাস্তার গাড়ি থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখা এবং সঠিকভাবে সোজা থাকা প্রয়োজন।

– অ্যাঙ্গেল পার্কিং (Angle Parking): এই ধরনের পার্কিং সাধারণত শপিং মল বা পাবলিক পার্কিং এলাকায় ব্যবহৃত হয়, যেখানে গাড়িগুলো নির্দিষ্ট কোণে পার্ক করা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে সহজ হলেও, পার্শ্ববর্তী গাড়ির সাথে দূরত্ব ঠিক রাখার বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

– পেন্ডুলাম পার্কিং: সরু পার্কিং স্পেসে ঢোকার জন্য এই কৌশলটি ব্যবহৃত হয়। পেন্ডুলাম স্টাইলে গাড়িকে সামনের দিকে নিয়ে গিয়ে পরে পিছনের দিকে ঠিকভাবে সরিয়ে পার্কিং করা হয়।

– স্ট্রেইট পার্কিং (Straight Parking): পার্কিং করার সবচেয়ে সাধারণ এবং সহজ কৌশল এটি। পার্কিং স্পটের সামনে গাড়ি নিয়ে সরাসরি প্রবেশ করানো হয়।

 ৩. ট্রাফিক আইন এবং পার্কিং

পার্কিং-এর সময় ট্রাফিক আইন মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সাধারণ পার্কিং সম্পর্কিত ট্রাফিক আইনের মধ্যে রয়েছে:

– নো পার্কিং জোন: নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে পার্কিং নিষিদ্ধ করা হয়, যেগুলো সাধারণত ট্রাফিকের নিরাপত্তার জন্য নির্ধারিত হয়। যেমন হাসপাতালের প্রবেশপথ, স্কুলের সামনে, ফায়ার স্টেশন ইত্যাদির আশেপাশে পার্কিং করা নিষিদ্ধ।

– ট্রাফিক সংকেত মেনে চলা: পার্কিং করতে হলে ড্রাইভারদের ট্রাফিক সংকেত এবং চিহ্নগুলো অনুসরণ করতে হবে। যেখানে “নো পার্কিং” সাইন দেওয়া থাকে, সেখানে গাড়ি পার্ক করা যাবে না। এছাড়া কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ে পার্কিং নিষিদ্ধ থাকে, সেই সময়সূচি অনুযায়ী পার্কিং করতে হবে।

– হুইলচেয়ার এক্সেসিবল পার্কিং: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত পার্কিং স্পট ব্যবহার করা উচিত নয় যদি আপনি অনুমোদিত না হন। এটি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন এবং অন্যদের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

 ৪. পার্কিং-এর নিরাপত্তা

পার্কিং-এর সময় শুধু ট্রাফিক আইনই নয়, নিরাপত্তা বিধিও মেনে চলতে হবে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা নিয়মাবলী হলো:

– গাড়ির দরজা লক করা: পার্কিং-এর পর গাড়ির সব দরজা ও জানালা ঠিকমতো লক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি গাড়ি চুরির ঝুঁকি কমায়।

– দ্রুত পার্কিং এড়ানো: তাড়াহুড়ো করে গাড়ি পার্ক করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ধীরে এবং সঠিকভাবে পার্কিং করা উচিত।

– অন্ধ স্থানগুলোতে খেয়াল রাখা: পার্কিং করার সময় ড্রাইভারদের অন্ধ স্থানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সাইড মিরর এবং রিয়ার ভিউ মিররের পাশাপাশি, পার্কিং সেন্সর বা ক্যামেরার সাহায্য নিতে পারেন।

 ৫. পার্কিং-সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি

কখনও কখনও পার্কিং করার সময় ড্রাইভাররা কিছু জরুরি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ:

– ব্রেক ফেইল হওয়ার ঝুঁকি: যদি পার্ক করার সময় গাড়ির ব্রেক কাজ না করে, তাহলে গাড়ির হাত ব্রেক ব্যবহার করে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা উচিত।

– পার্কিং স্পেস না পাওয়া: ট্রাফিক এলাকায় কখনও কখনও পার্কিং স্পেস পাওয়া কঠিন হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ড্রাইভারদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা উচিত এবং অনুমোদিত জায়গায় পার্কিং করা উচিত।

 ৬. পরিবেশ এবং স্থানীয় নিয়মাবলী

পার্কিং-এর ক্ষেত্রে পরিবেশ এবং স্থানীয় নিয়মাবলীও ড্রাইভারদের মাথায় রাখতে হবে। যেমন:

– ইঞ্জিন বন্ধ রাখা: পার্ক করার পর ইঞ্জিন বন্ধ রাখা উচিত। ইঞ্জিন চালু রাখা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং অপ্রয়োজনীয় জ্বালানি অপচয় ঘটায়।

– পার্কিং ফি মেনে চলা: যেসব এলাকায় পার্কিং ফি নির্ধারিত রয়েছে, সেগুলোতে ফি প্রদান করতে হবে। অনেক এলাকায় অনুমোদনবিহীন পার্কিংয়ের জন্য জরিমানা ধার্য করা হয়, যা এড়ানোর জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ড্রাইভিং স্কিল লেভেল ৩ কোর্সে পার্কিং সম্পর্কিত এই নিয়মাবলী শেখানোর মাধ্যমে একজন ড্রাইভারকে সঠিকভাবে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সঠিকভাবে পার্কিং করতে পারা একটি দক্ষ ড্রাইভারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী। এটি শুধু ড্রাইভারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না, বরং অন্যদের জন্যও ট্রাফিক ব্যবস্থা সহজ করে তোলে।

 

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ড্রাইভিং স্কিল লেভেল-৩ CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?