১২:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট

কনক ফেরদৌসী
  • আপডেট সময় ০২:৫১:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১৫০ বার পড়া হয়েছে

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট

খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ধাপ। প্রতিটি ধাপে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি, নিয়ম এবং নীতিমালা অনুসরণ করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং সরবরাহে ঝুঁকিগুলি চিহ্নিত করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এটি খাদ্য উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, যা খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Food Risk Assessment)

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয় যেখানে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে খাদ্যের ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় খাদ্যে উপস্থিত ক্ষতিকারক উপাদান বা দূষণের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট মূলত চারটি ধাপে বিভক্ত:

1. ঝুঁকির পরিচয় নির্ধারণ (Hazard Identification): এই ধাপে খাদ্যের মধ্যে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি (যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, টক্সিন, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি) চিহ্নিত করা হয়। এতে খাদ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিবহনের সময় যে সব দূষণ হতে পারে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

2. ঝুঁকির প্রভাব মূল্যায়ন (Hazard Characterization): ঝুঁকির প্রভাব মূল্যায়ন ধাপে ক্ষতিকর উপাদানগুলির প্রভাব কেমন হতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা হয়। বিশেষ করে, ক্ষতিকর উপাদানগুলি মানুষের স্বাস্থ্যে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

3. প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা (Exposure Assessment):  এই ধাপে নির্ধারণ করা হয় যে, কোন কোন খাদ্য, কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী, এবং কী পরিমাণ খাদ্য এই ক্ষতিকারক উপাদান দ্বারা দূষিত হতে পারে। অর্থাৎ, মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং খাদ্য গ্রহণের পরিমাণের ভিত্তিতে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

4. ঝুঁকি নির্ধারণ (Risk Characterization): ঝুঁকি নির্ধারণ ধাপে পূর্ববর্তী তিনটি ধাপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মোট ঝুঁকি নির্ধারণ করা হয়। এটি খাদ্য নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যাতে খাদ্য উৎপাদক, ভোক্তা এবং সরকারের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ফুড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (Food Risk Management)

ফুড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ফলাফল অনুযায়ী খাদ্য সুরক্ষার ঝুঁকি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে খাদ্যবাহিত রোগ এবং দূষণের ঝুঁকি কমানো বা দূর করা। এর মধ্যে বিভিন্ন নীতি, বিধিনিষেধ এবং নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রধানত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়:

1. নীতিমালা এবং নির্দেশনা প্রণয়ন: ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে ঝুঁকি কমানোর জন্য বিশেষ নীতিমালা এবং নির্দেশনা প্রণয়ন করা হয়। এটি খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর প্রতিটি ধাপেই প্রযোজ্য। খাদ্য নিরাপত্তা আইনের কঠোর প্রয়োগ, খাদ্য উৎপাদনকারীদের নিয়ম মেনে চলা, এবং নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম এই পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত।

2. মনিটরিং এবং মূল্যায়ন: ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। এতে HACCP (Hazard Analysis and Critical Control Points) এর মতো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিটি স্তরে ঝুঁকি চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মান নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য প্রক্রিয়ার নিরীক্ষণ এবং পরীক্ষাগারে খাদ্য নমুনা পরীক্ষা এর মাধ্যমে সঠিকভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা হয়।

3. ঝুঁকি যোগাযোগ: খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে স্বচ্ছ যোগাযোগ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য উৎপাদনকারী, সরকারী সংস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং ভোক্তাদের মধ্যে সঠিক তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা যায়। যেমন, খাদ্য পণ্যে উপস্থিত ক্ষতিকারক উপাদান সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা, খাদ্য নিরাপত্তা নির্দেশিকা এবং সাবধানতা অবলম্বন সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করা।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট ও ম্যানেজমেন্টের চ্যালেঞ্জ

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে:

1. খাদ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য: বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি, প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার মধ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে। এটি ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই বৈশ্বিক মান অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

2. ব্যবস্থাপনার অভাব: অনেক দেশে ফুড সেফটি সম্পর্কিত নীতিমালা বা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যথাযথভাবে নেওয়া হয় না। এছাড়া, খাদ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবহন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে অবহেলা বা গাফিলতির কারণে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

3. উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ:  ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ায় উন্নত প্রযুক্তি এবং তথ্য-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাবও অন্যতম চ্যালেঞ্জ। খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য ধাপ। সঠিকভাবে এই দুটি ধাপ পরিচালনা করতে পারলে খাদ্যবাহিত রোগ এবং দূষণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। এজন্য খাদ্য উৎপাদক, ভোক্তা, এবং সরকারকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে, যাতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর Food Quality Control Level-৩ CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কনক ফেরদৌসী

আসসালামুয়ালাইকুম আমি কনক ফেরদৌস। একজন ফুড এন্ড নিউট্রেশন এক্সপার্ট। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (BTEB) ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) কর্তৃক, স্কিল লেভেল সম্পন্ন করেছি। bdskills.org স্কিলস কন্টেন্ট প্লাটফরমে আমি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুড এন্ড ব্যাভারেজ প্রডাকশন, সার্ভিস, প্রসেসিং এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট

আপডেট সময় ০২:৫১:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট

খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ধাপ। প্রতিটি ধাপে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি, নিয়ম এবং নীতিমালা অনুসরণ করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং সরবরাহে ঝুঁকিগুলি চিহ্নিত করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এটি খাদ্য উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, যা খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Food Risk Assessment)

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয় যেখানে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে খাদ্যের ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় খাদ্যে উপস্থিত ক্ষতিকারক উপাদান বা দূষণের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট মূলত চারটি ধাপে বিভক্ত:

1. ঝুঁকির পরিচয় নির্ধারণ (Hazard Identification): এই ধাপে খাদ্যের মধ্যে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি (যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, টক্সিন, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি) চিহ্নিত করা হয়। এতে খাদ্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিবহনের সময় যে সব দূষণ হতে পারে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

2. ঝুঁকির প্রভাব মূল্যায়ন (Hazard Characterization): ঝুঁকির প্রভাব মূল্যায়ন ধাপে ক্ষতিকর উপাদানগুলির প্রভাব কেমন হতে পারে, তা বিশ্লেষণ করা হয়। বিশেষ করে, ক্ষতিকর উপাদানগুলি মানুষের স্বাস্থ্যে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

3. প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা (Exposure Assessment):  এই ধাপে নির্ধারণ করা হয় যে, কোন কোন খাদ্য, কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী, এবং কী পরিমাণ খাদ্য এই ক্ষতিকারক উপাদান দ্বারা দূষিত হতে পারে। অর্থাৎ, মানুষের খাদ্যাভ্যাস এবং খাদ্য গ্রহণের পরিমাণের ভিত্তিতে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

4. ঝুঁকি নির্ধারণ (Risk Characterization): ঝুঁকি নির্ধারণ ধাপে পূর্ববর্তী তিনটি ধাপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মোট ঝুঁকি নির্ধারণ করা হয়। এটি খাদ্য নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যাতে খাদ্য উৎপাদক, ভোক্তা এবং সরকারের মধ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ফুড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট (Food Risk Management)

ফুড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ফলাফল অনুযায়ী খাদ্য সুরক্ষার ঝুঁকি হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে খাদ্যবাহিত রোগ এবং দূষণের ঝুঁকি কমানো বা দূর করা। এর মধ্যে বিভিন্ন নীতি, বিধিনিষেধ এবং নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রধানত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়:

1. নীতিমালা এবং নির্দেশনা প্রণয়ন: ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে ঝুঁকি কমানোর জন্য বিশেষ নীতিমালা এবং নির্দেশনা প্রণয়ন করা হয়। এটি খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর প্রতিটি ধাপেই প্রযোজ্য। খাদ্য নিরাপত্তা আইনের কঠোর প্রয়োগ, খাদ্য উৎপাদনকারীদের নিয়ম মেনে চলা, এবং নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম এই পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত।

2. মনিটরিং এবং মূল্যায়ন: ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। এতে HACCP (Hazard Analysis and Critical Control Points) এর মতো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিটি স্তরে ঝুঁকি চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মান নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য প্রক্রিয়ার নিরীক্ষণ এবং পরীক্ষাগারে খাদ্য নমুনা পরীক্ষা এর মাধ্যমে সঠিকভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করা হয়।

3. ঝুঁকি যোগাযোগ: খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে স্বচ্ছ যোগাযোগ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য উৎপাদনকারী, সরকারী সংস্থা, খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং ভোক্তাদের মধ্যে সঠিক তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা যায়। যেমন, খাদ্য পণ্যে উপস্থিত ক্ষতিকারক উপাদান সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা, খাদ্য নিরাপত্তা নির্দেশিকা এবং সাবধানতা অবলম্বন সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করা।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট ও ম্যানেজমেন্টের চ্যালেঞ্জ

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে:

1. খাদ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য: বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতি, প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার মধ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে। এটি ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই বৈশ্বিক মান অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

2. ব্যবস্থাপনার অভাব: অনেক দেশে ফুড সেফটি সম্পর্কিত নীতিমালা বা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যথাযথভাবে নেওয়া হয় না। এছাড়া, খাদ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবহন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে অবহেলা বা গাফিলতির কারণে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

3. উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ:  ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ায় উন্নত প্রযুক্তি এবং তথ্য-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাবও অন্যতম চ্যালেঞ্জ। খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উন্নত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।

ফুড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং ম্যানেজমেন্ট খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য ধাপ। সঠিকভাবে এই দুটি ধাপ পরিচালনা করতে পারলে খাদ্যবাহিত রোগ এবং দূষণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায়। এজন্য খাদ্য উৎপাদক, ভোক্তা, এবং সরকারকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে, যাতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর Food Quality Control Level-৩ CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?