০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
নতুন প্রযুক্তি ও নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে

ফুড সেফটি এবং হাইজিন: সাফল্যের পথনির্দেশ

রাজিয়া সুলতানা
  • আপডেট সময় ১০:৩২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরুর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। খাদ্যের সুরক্ষা, মান বজায় রাখা এবং হাইজিন অর্থাৎ ফুড সেফটি এবং হাইজিন নিশ্চিত করতে নিচে কিছু প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দেওয়া হলো।

১. ফুড সেফটি এবং স্যানিটেশন

ফুড সেফটি নিশ্চিত করার জন্য স্যানিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।

ব্যক্তিগত স্যানিটেশন:

  • ✓ কর্মীদের নিয়মিতভাবে হাত ধোয়া।
  • ✓ পরিষ্কার পোশাক পরিধান করা।
  • ✓ চুল ঢেকে রাখা এবং নখ পরিষ্কার রাখা।

কীটনাশক ব্যবহার:

  • ✓ কর্মস্থল কীটপতঙ্গমুক্ত রাখতে নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ।
  • ✓ স্থানে স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস বজায় রাখা।

খাদ্যের সংরক্ষণ:

  • ✓ খাদ্যের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা।
  • ✓ গরম খাবার গরম এবং ঠাণ্ডা খাবার ঠাণ্ডা রাখার নিয়ম মেনে চলা।

২. খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ

মানসম্মত খাদ্য প্রস্তুত করা ফুড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।

উপাদান পরীক্ষা:

  • ✓ কাঁচামাল কেনার সময় গুণগত মান পরীক্ষা করা।
  • ✓ পরীক্ষামূলকভাবে কাঁচামাল গ্রহণ।

ফুড প্রসেসিং নিয়ম:

  • ✓ প্রতিটি ধাপে খাদ্যের গুণগত মান বজায় রাখা।
  • ✓ তাপমাত্রা এবং সময় নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী মেনে চলা।

বিষক্রিয়া প্রতিরোধ:

  • ✓ উপাদানের মেয়াদ যাচাই করা।
  • ✓ মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো উপাদান ব্যবহার না করা।

৩. পরিচ্ছন্নতা এবং হাইজিন

পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির জন্য অপরিহার্য।

পরিষ্কার কাজের পরিবেশ:

  • ✓ ফুড প্রসেসিংয়ের প্রতিটি ধাপে যন্ত্রপাতি এবং স্থানের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।

রান্নাঘর এবং স্টোরেজ:

  • ✓ রান্নাঘর এবং স্টোরেজ এলাকাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা।
  • ✓ ফুড কন্টেইনার ঢাকনাসহ সংরক্ষণ করা।

পণ্য প্যাকেজিং:

  • ✓ প্যাকেজিংয়ের সময় জীবাণুমুক্ত এবং ফুড-গ্রেড উপাদান ব্যবহার নিশ্চিত করা।

৪. নিয়মিত প্রশিক্ষণ

কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

কর্মীদের প্রশিক্ষণ:

  • ✓ ফুড সেফটি এবং হাইজিন নিয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ আয়োজন।
  • ✓ নতুন প্রযুক্তি ও নিয়ম সম্পর্কে কর্মীদের সচেতন করা।
  • ✓ খাদ্য সুরক্ষা বিষয়ক আইন এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে কর্মীদের আপডেট রাখা।

৫. প্রশাসনিক নিয়মাবলী

ফুড ইন্ডাস্ট্রি সঠিক পথে পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক নীতিমালা মেনে চলা অপরিহার্য।

নিয়ম রেজুলেশন মেনে চলা:

  • ✓ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক খাদ্য সুরক্ষা বিষয়ক আইন মেনে চলা।

ডকুমেন্টেশন:

  • ✓ প্রতিটি কার্যক্রম নথিভুক্ত করা।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ:

  • ✓ কাজের পরিবেশ এবং যন্ত্রপাতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা:

  • ✓ কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা।
  • ✓ অসুস্থ কর্মীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা।

উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কার্যকরভাবে কাজ শুরু করা যাবে। এর মাধ্যমে খাদ্যের মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরি করতে পারলে ফুড ইন্ডাস্ট্রি সহজেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারবে।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ফুড সেফটি এবং হাইজিন স্কিল লেভেল– CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজিয়া সুলতানা

আমি রাজিয়া সুলতানা একজন বেকিং ও কুকিং এক্সপার্ট। BTEB থেকে ট্রেইনার এন্ড অ্যাসেসর সম্পন্ন করেছি এবং BTEB এর বেকিং এন্ড কুকিং লেভেল 1.2.3. সম্পন্ন করেছি। এছাড়াও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন (NSDA) কর্তৃক ফুড এন্ড বেভারেজ প্রোডাকশন লেভেল-৩ সম্পূর্ণ করেছি। হোপ টেকনিক্যাল এ তিন মাসের একটি কোর্স-এ ট্রেইনার হিসেবে কর্মরত ছিলাম। bdskills.org স্কিলস কন্টেন্ট প্ল্যাটফর্মে আমি শিক্ষার্থীদের বেকিং কুকিং এর উপর খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

নতুন প্রযুক্তি ও নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে

ফুড সেফটি এবং হাইজিন: সাফল্যের পথনির্দেশ

আপডেট সময় ১০:৩২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরুর আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম-কানুন সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। খাদ্যের সুরক্ষা, মান বজায় রাখা এবং হাইজিন অর্থাৎ ফুড সেফটি এবং হাইজিন নিশ্চিত করতে নিচে কিছু প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দেওয়া হলো।

১. ফুড সেফটি এবং স্যানিটেশন

ফুড সেফটি নিশ্চিত করার জন্য স্যানিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।

ব্যক্তিগত স্যানিটেশন:

  • ✓ কর্মীদের নিয়মিতভাবে হাত ধোয়া।
  • ✓ পরিষ্কার পোশাক পরিধান করা।
  • ✓ চুল ঢেকে রাখা এবং নখ পরিষ্কার রাখা।

কীটনাশক ব্যবহার:

  • ✓ কর্মস্থল কীটপতঙ্গমুক্ত রাখতে নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ।
  • ✓ স্থানে স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস বজায় রাখা।

খাদ্যের সংরক্ষণ:

  • ✓ খাদ্যের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা।
  • ✓ গরম খাবার গরম এবং ঠাণ্ডা খাবার ঠাণ্ডা রাখার নিয়ম মেনে চলা।

২. খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ

মানসম্মত খাদ্য প্রস্তুত করা ফুড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।

উপাদান পরীক্ষা:

  • ✓ কাঁচামাল কেনার সময় গুণগত মান পরীক্ষা করা।
  • ✓ পরীক্ষামূলকভাবে কাঁচামাল গ্রহণ।

ফুড প্রসেসিং নিয়ম:

  • ✓ প্রতিটি ধাপে খাদ্যের গুণগত মান বজায় রাখা।
  • ✓ তাপমাত্রা এবং সময় নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী মেনে চলা।

বিষক্রিয়া প্রতিরোধ:

  • ✓ উপাদানের মেয়াদ যাচাই করা।
  • ✓ মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো উপাদান ব্যবহার না করা।

৩. পরিচ্ছন্নতা এবং হাইজিন

পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির জন্য অপরিহার্য।

পরিষ্কার কাজের পরিবেশ:

  • ✓ ফুড প্রসেসিংয়ের প্রতিটি ধাপে যন্ত্রপাতি এবং স্থানের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।

রান্নাঘর এবং স্টোরেজ:

  • ✓ রান্নাঘর এবং স্টোরেজ এলাকাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা।
  • ✓ ফুড কন্টেইনার ঢাকনাসহ সংরক্ষণ করা।

পণ্য প্যাকেজিং:

  • ✓ প্যাকেজিংয়ের সময় জীবাণুমুক্ত এবং ফুড-গ্রেড উপাদান ব্যবহার নিশ্চিত করা।

৪. নিয়মিত প্রশিক্ষণ

কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

কর্মীদের প্রশিক্ষণ:

  • ✓ ফুড সেফটি এবং হাইজিন নিয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ আয়োজন।
  • ✓ নতুন প্রযুক্তি ও নিয়ম সম্পর্কে কর্মীদের সচেতন করা।
  • ✓ খাদ্য সুরক্ষা বিষয়ক আইন এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে কর্মীদের আপডেট রাখা।

৫. প্রশাসনিক নিয়মাবলী

ফুড ইন্ডাস্ট্রি সঠিক পথে পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক নীতিমালা মেনে চলা অপরিহার্য।

নিয়ম রেজুলেশন মেনে চলা:

  • ✓ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক খাদ্য সুরক্ষা বিষয়ক আইন মেনে চলা।

ডকুমেন্টেশন:

  • ✓ প্রতিটি কার্যক্রম নথিভুক্ত করা।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ:

  • ✓ কাজের পরিবেশ এবং যন্ত্রপাতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা:

  • ✓ কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা।
  • ✓ অসুস্থ কর্মীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা।

উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে কার্যকরভাবে কাজ শুরু করা যাবে। এর মাধ্যমে খাদ্যের মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরি করতে পারলে ফুড ইন্ডাস্ট্রি সহজেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারবে।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ফুড সেফটি এবং হাইজিন স্কিল লেভেল– CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।গ্রাফিক্স ডিজাইন ?