০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও এর জনপ্রিয়তার কারণ।

মোঃ মোসলেহ উদ্দিন দিপু
  • আপডেট সময় ০৬:৫৪:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

দীপক প্রতিদিনের মতোই আজও ঘুম থেকে উঠেই তার ফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ চেক করতে শুরু করলো। সে স্ক্রল করতে গিয়ে প্রথম দুটি পোস্ট দেখার পরপরই একটি বিজ্ঞাপন তার চোখে পড়লো। এটি নতুন কিছু নয়, কারণ প্রায় প্রতিদিনই এমন বিজ্ঞাপন দেখতে পায় সে। একটু স্ক্রল করতেই আবারও আরও একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেলো। এইবারের বিজ্ঞাপনটি প্রথমটির চেয়ে আলাদা। পরে, যখন দীপক মেসেঞ্জারের ‘ডে’ চেক করতে গেলো, তখনও চার পাঁচটি ডে দেখার পর মাঝখানে একটি বিজ্ঞাপন তার সামনে চলে এলো। আগে মেসেঞ্জারে এমনটা দেখা যেত না, তবে এখন মেসেঞ্জারে ফেসবুকের মতোই বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে।

প্রতিদিনই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিজ্ঞাপন দেখে থাকি, কিন্তু কি কখনো ভেবেছি কেন এই বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের সামনে আসে? এর কারণ একটাই— ডিজিটাল মার্কেটিং। যেহেতু এসব বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আসে, তাই একে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আজ আমরা এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়েই আলোচনা করবো।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে বোঝায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ড প্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট শেয়ার করা। এখানে টেক্সট, ভিডিও, বা ছবি পোস্টের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট অডিয়েন্স তৈরি করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য পেইড বিজ্ঞাপনের অপশনও থাকে।

সংক্ষেপে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংকে (SMM) বলা হয়। লেখার সময় বারবার পুরো শব্দটি না লিখে আমরা এসএমএম ব্যবহার করবো, যা বুঝতে পাঠকদের অসুবিধা হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জনপ্রিয় কেন?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম প্রধান অংশ। এর আগে জানতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া কী। মূলত, সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে এমন কিছু ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন যেখানে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় ৫১% মানুষ সক্রিয়ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। ৩.৯৬ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত রয়েছে এবং গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৪৪ মিনিট সময় তারা সেখানে ব্যয় করেন। শিশুদের বাদ দিলে পৃথিবীর প্রায় ৬৫% মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ফিলিপাইন এই দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে গড়ে একজন ব্যক্তি প্রায় ৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও প্রতিদিন গড়ে ২ ঘন্টা ৩ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় ব্যয় করেন। দৈনিক এক মিলিয়নের বেশি মানুষ নতুনভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো দেখে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া কী পরিমাণে জনপ্রিয়। এর বিশাল ব্যবহারকারী ভিত্তি এবং দৈনিক সময় ব্যয়ের কারণে, মার্কেটারদের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ। এত বেশি মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছানো সম্ভব বলেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এত জনপ্রিয়।

জনপ্রিয় কিছু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম-

✔ ফেসবুকঃ সোশ্যাল মিডিয়ার কথা উঠলেই সবার আগে যে নামটি আসে, তা হলো ফেসবুক। এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ৮৯% মার্কেটার তাদের মার্কেটিংয়ের জন্য ফেসবুক ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের ৮৩% ফেসবুকে সক্রিয় থাকে এবং ৬৬% তাদের প্রিয় ব্র্যান্ডকে ফেসবুকে ফলো করে। প্রতিমাসে ২.৫ বিলিয়ন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন।

ফেসবুক লাইভ মার্কেটিং এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় ৪২% মার্কেটার তাদের লাইভ কন্টেন্ট তৈরি করেন ফেসবুক লাইভ করার জন্য। প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৬টিরও বেশি পোস্ট করে মার্কেটাররা তাদের ব্র্যান্ড প্রচার করে থাকেন। পোস্টের এঙ্গেইজমেন্ট রেট প্রায় ০.০৯%।

✔ ইন্সটাগ্রামঃ ইন্সটাগ্রাম খুব কম সময়ের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এর ডায়নামিক ফিচারগুলো ব্যবহারকারীদের মুগ্ধ করে। মাসে প্রায় ১ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে এবং ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারীদের ৯০% তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডকে ফলো করে। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্সটাগ্রাম খুবই কার্যকর। মার্কেটারদের মধ্যে ৮৯% ইন্সটাগ্রামকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের জন্য পছন্দের প্ল্যাটফর্ম মনে করেন।

✔ টুইটারঃ টুইটার একটি বিশেষ ধরনের প্ল্যাটফর্ম, যেখানে প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সক্রিয়। এখানে মার্কেটিং কিছুটা ব্যয়বহুল এবং নির্দিষ্ট কৌশল প্রয়োজন। প্রতি মাসে ৩৩০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী টুইটার ব্যবহার করেন, এবং প্রতিদিন ১৪৫ মিলিয়ন মানুষ টুইটারে সক্রিয় থাকেন।

টুইটার বিশেষভাবে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি, ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংক্ষেপে মতামত প্রকাশের জন্য। এর এনগেজমেন্ট রেট ০.০৪৮% এবং মার্কেটারদের কাছে এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম হিসেবে গণ্য হয়।

✔ পিন্টারেস্টঃ পিন্টারেস্টে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী আসে কিছু নির্দিষ্ট পণ্য কেনার উদ্দেশ্যে, যা একে অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম থেকে আলাদা করে। এখানে প্রতিমাসে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকেন এবং তারা প্রায় ২০০ বিলিয়নেরও বেশি পোস্ট পিন করে থাকেন। নতুন ব্র্যান্ড ও পণ্য খোঁজার জন্য ৭৭% ব্যবহারকারী পিন্টারেস্টে আসেন।

✔ লিংকডইনঃ লিংকডইন একটি প্রফেশনাল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ৬৬০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী নিবন্ধিত। এটি প্রধানত ব্যবসায়িক লিড তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ৯৫% বিটুবি কন্টেন্ট মার্কেটার অর্গানিক কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের জন্য লিংকডইন ব্যবহার করেন। ২০১৯ সালে লিংকডইনের রেভিনিউ ৬.৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আজকের বিশ্বের অন্যতম কার্যকর ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট, ও লিংকডইনের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আজ ব্যবসার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। এজন্য, মার্কেটারদের এসব প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহার ও কৌশল সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি এর ফেসবুক পেজকমিউনিটি গ্রুপ অথবা ওয়েবসাইট ও গ্রুপ থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোঃ মোসলেহ উদ্দিন দিপু

আমি মোঃ মোসলেহ উদ্দিন দিপু একজন আইটি ও TVET এক্সপার্ট, প্রশিক্ষক এবং এডুকেশন কনসাল্টেন্ট হিসেবে বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করছি। পাশাপাশি উদ্যোক্তা উন্নয়নে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসএমই ফাউন্ডেশন ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে এটুআই, আইসিটি বিভাগে সাথে কাজ করছি। বর্তমানে আমি জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন সার্টিফাইড স্কিলস এসেসস।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও এর জনপ্রিয়তার কারণ।

আপডেট সময় ০৬:৫৪:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দীপক প্রতিদিনের মতোই আজও ঘুম থেকে উঠেই তার ফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ চেক করতে শুরু করলো। সে স্ক্রল করতে গিয়ে প্রথম দুটি পোস্ট দেখার পরপরই একটি বিজ্ঞাপন তার চোখে পড়লো। এটি নতুন কিছু নয়, কারণ প্রায় প্রতিদিনই এমন বিজ্ঞাপন দেখতে পায় সে। একটু স্ক্রল করতেই আবারও আরও একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেলো। এইবারের বিজ্ঞাপনটি প্রথমটির চেয়ে আলাদা। পরে, যখন দীপক মেসেঞ্জারের ‘ডে’ চেক করতে গেলো, তখনও চার পাঁচটি ডে দেখার পর মাঝখানে একটি বিজ্ঞাপন তার সামনে চলে এলো। আগে মেসেঞ্জারে এমনটা দেখা যেত না, তবে এখন মেসেঞ্জারে ফেসবুকের মতোই বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে।

প্রতিদিনই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিজ্ঞাপন দেখে থাকি, কিন্তু কি কখনো ভেবেছি কেন এই বিজ্ঞাপনগুলো আমাদের সামনে আসে? এর কারণ একটাই— ডিজিটাল মার্কেটিং। যেহেতু এসব বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আসে, তাই একে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। আজ আমরা এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়েই আলোচনা করবো।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে বোঝায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ড প্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট শেয়ার করা। এখানে টেক্সট, ভিডিও, বা ছবি পোস্টের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট অডিয়েন্স তৈরি করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য পেইড বিজ্ঞাপনের অপশনও থাকে।

সংক্ষেপে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংকে (SMM) বলা হয়। লেখার সময় বারবার পুরো শব্দটি না লিখে আমরা এসএমএম ব্যবহার করবো, যা বুঝতে পাঠকদের অসুবিধা হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জনপ্রিয় কেন?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম প্রধান অংশ। এর আগে জানতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া কী। মূলত, সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে এমন কিছু ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন যেখানে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর প্রায় ৫১% মানুষ সক্রিয়ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। ৩.৯৬ বিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত রয়েছে এবং গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৪৪ মিনিট সময় তারা সেখানে ব্যয় করেন। শিশুদের বাদ দিলে পৃথিবীর প্রায় ৬৫% মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ফিলিপাইন এই দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে গড়ে একজন ব্যক্তি প্রায় ৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও প্রতিদিন গড়ে ২ ঘন্টা ৩ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় ব্যয় করেন। দৈনিক এক মিলিয়নের বেশি মানুষ নতুনভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হচ্ছে।

এই তথ্যগুলো দেখে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া কী পরিমাণে জনপ্রিয়। এর বিশাল ব্যবহারকারী ভিত্তি এবং দৈনিক সময় ব্যয়ের কারণে, মার্কেটারদের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ। এত বেশি মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছানো সম্ভব বলেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এত জনপ্রিয়।

জনপ্রিয় কিছু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম-

✔ ফেসবুকঃ সোশ্যাল মিডিয়ার কথা উঠলেই সবার আগে যে নামটি আসে, তা হলো ফেসবুক। এটি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ৮৯% মার্কেটার তাদের মার্কেটিংয়ের জন্য ফেসবুক ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের ৮৩% ফেসবুকে সক্রিয় থাকে এবং ৬৬% তাদের প্রিয় ব্র্যান্ডকে ফেসবুকে ফলো করে। প্রতিমাসে ২.৫ বিলিয়ন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন।

ফেসবুক লাইভ মার্কেটিং এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রায় ৪২% মার্কেটার তাদের লাইভ কন্টেন্ট তৈরি করেন ফেসবুক লাইভ করার জন্য। প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৬টিরও বেশি পোস্ট করে মার্কেটাররা তাদের ব্র্যান্ড প্রচার করে থাকেন। পোস্টের এঙ্গেইজমেন্ট রেট প্রায় ০.০৯%।

✔ ইন্সটাগ্রামঃ ইন্সটাগ্রাম খুব কম সময়ের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এর ডায়নামিক ফিচারগুলো ব্যবহারকারীদের মুগ্ধ করে। মাসে প্রায় ১ বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে এবং ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারীদের ৯০% তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডকে ফলো করে। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্সটাগ্রাম খুবই কার্যকর। মার্কেটারদের মধ্যে ৮৯% ইন্সটাগ্রামকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের জন্য পছন্দের প্ল্যাটফর্ম মনে করেন।

✔ টুইটারঃ টুইটার একটি বিশেষ ধরনের প্ল্যাটফর্ম, যেখানে প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সক্রিয়। এখানে মার্কেটিং কিছুটা ব্যয়বহুল এবং নির্দিষ্ট কৌশল প্রয়োজন। প্রতি মাসে ৩৩০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী টুইটার ব্যবহার করেন, এবং প্রতিদিন ১৪৫ মিলিয়ন মানুষ টুইটারে সক্রিয় থাকেন।

টুইটার বিশেষভাবে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, সেলিব্রিটি, ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংক্ষেপে মতামত প্রকাশের জন্য। এর এনগেজমেন্ট রেট ০.০৪৮% এবং মার্কেটারদের কাছে এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম হিসেবে গণ্য হয়।

✔ পিন্টারেস্টঃ পিন্টারেস্টে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী আসে কিছু নির্দিষ্ট পণ্য কেনার উদ্দেশ্যে, যা একে অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম থেকে আলাদা করে। এখানে প্রতিমাসে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকেন এবং তারা প্রায় ২০০ বিলিয়নেরও বেশি পোস্ট পিন করে থাকেন। নতুন ব্র্যান্ড ও পণ্য খোঁজার জন্য ৭৭% ব্যবহারকারী পিন্টারেস্টে আসেন।

✔ লিংকডইনঃ লিংকডইন একটি প্রফেশনাল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ৬৬০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী নিবন্ধিত। এটি প্রধানত ব্যবসায়িক লিড তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ৯৫% বিটুবি কন্টেন্ট মার্কেটার অর্গানিক কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের জন্য লিংকডইন ব্যবহার করেন। ২০১৯ সালে লিংকডইনের রেভিনিউ ৬.৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আজকের বিশ্বের অন্যতম কার্যকর ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, পিন্টারেস্ট, ও লিংকডইনের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আজ ব্যবসার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। এজন্য, মার্কেটারদের এসব প্ল্যাটফর্মের সঠিক ব্যবহার ও কৌশল সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি এর ফেসবুক পেজকমিউনিটি গ্রুপ অথবা ওয়েবসাইট ও গ্রুপ থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?