০৭:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

হাউজ কিপিং-এ চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল

রুকসানা আক্তার
  • আপডেট সময় ০৩:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৫১ বার পড়া হয়েছে

হাউজ কিপিং-এ চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল

হাউজকিপিং বা গৃহপরিচর্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানকে পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন। যদিও এটি প্রতিদিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, হাউজকিপিংয়ের সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা যুক্ত রয়েছে। তবে কিছু কৌশল ব্যবহার করে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় এবং গৃহপরিচর্যার কাজটি আরও সহজ এবং কার্যকর করা সম্ভব।

 হাউজকিপিং-এর প্রধান চ্যালেঞ্জ:

 ১. সময় ব্যবস্থাপনার সমস্যা:

গৃহপরিচর্যার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময় ব্যবস্থাপনা। দিনের মধ্যে অনেক কাজ থাকতে পারে, যেমন ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া, বাসন মাজার পাশাপাশি পরিবারের অন্য কাজ। সঠিক সময় ব্যবস্থাপনার অভাবে কোনো কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে, কিংবা কাজের মান ভালো না হতে পারে।

সমাধান: 

সময় ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সুসংগঠিত রুটিন বা সময়সূচি তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহের কোন দিনে কোন কাজ করা হবে তা নির্ধারণ করে কাজ ভাগ করলে সময়ের সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব। এছাড়া, কাজগুলোকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, যেমন প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এবং তৎক্ষণাৎ কাজগুলো শেষ করা এবং পরে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা।

 ২. অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম:

হাউজকিপিংয়ের সময় অপর্যাপ্ত বা খারাপ সরঞ্জামের কারণে কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে। যেমন, ভাঙা ঝাড়ু বা কাজ না করা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করলে কাজের মান কমে যেতে পারে এবং সময়ও বেশি লাগতে পারে।

সমাধান: 

কাজের সরঞ্জামগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং সময়মতো মেরামত বা প্রতিস্থাপন করা উচিত। ভালো মানের সরঞ্জাম কেনা এবং সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হাউজকিপিংকে অনেক সহজ করে তোলে। সরঞ্জামগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার মাধ্যমে সেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় এবং কাজ করার গতি বাড়ানো যায়।

 ৩. অগোছালো পরিবেশ:

একটি অগোছালো পরিবেশ কাজের গতি কমিয়ে দেয় এবং মানসিক চাপও বাড়ায়। কখনো কখনো সঠিকভাবে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা না হলে কাজের জায়গা সীমিত হয়ে যায়, যা কাজকে আরও কঠিন করে তোলে।

সমাধান: 

অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনকার ব্যবহৃত জিনিসগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখা উচিত। এছাড়া প্রয়োজন নেই এমন জিনিসগুলোকে ফেলে দেওয়া বা দান করা যেতে পারে। “মিনিমালিজম” বা কম জিনিসপত্র ব্যবহারের নীতি মেনে চললে অগোছালো অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন কিছুটা সময় ব্যয় করে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলে বড় পরিস্কার করার কাজও সহজ হয়ে যায়।

 ৪. পরিচ্ছন্নতার স্থায়িত্ব:

একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান একবার পরিচ্ছন্ন করলেই দীর্ঘদিন তা পরিষ্কার থাকবে না। পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি ধারাবাহিক কাজ। পরিবারের সদস্যদের বা কর্মীদের অসতর্কতার কারণে পরিচ্ছন্নতা দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সমাধান: 

পরিচ্ছন্নতার স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সকলের সচেতনতা জরুরি। পরিবারের সদস্যদের বা কর্মীদের হাউজকিপিংয়ের নিয়ম মেনে চলতে উৎসাহিত করতে হবে। যেমন, ব্যবহার শেষে জিনিসপত্র নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, খাবারের পর বাসন ধুয়ে ফেলা, এবং ময়লা জিনিসপত্র যথাস্থানে ফেলা ইত্যাদি।

 ৫. স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ:

হাউজকিপিংয়ের সময় অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যেমন, রাসায়নিক ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে ত্বকে সমস্যা, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি, ভারী জিনিসপত্র সরানো বা ফার্নিচার স্থানান্তরের সময় শারীরিক আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সমাধান: 

স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বজায় রাখতে নিরাপদ ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত, যেমন ইকো-ফ্রেন্ডলি ও নন-টক্সিক উপাদানসমৃদ্ধ ক্লিনিং প্রোডাক্ট। রাসায়নিক ব্যবহারের সময় গ্লাভস, মাস্ক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। ভারী জিনিস সরানোর সময় শরীরের সঠিক ভঙ্গি ব্যবহার এবং প্রয়োজনে সহায়তা নেওয়া উচিত।

 ৬. আবহাওয়া বা মৌসুমি সমস্যা:

বছরের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের আবহাওয়া সমস্যা তৈরি করে। বর্ষাকালে আর্দ্রতা, শীতকালে ধুলো এবং গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে হাউজকিপিংয়ের কাজ জটিল হতে পারে। আবহাওয়ার প্রভাব ঘরের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সমাধান: 

আবহাওয়া অনুযায়ী কাজের পদ্ধতি এবং সময় ঠিক করা উচিত। বর্ষাকালে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ধুলো মোকাবিলায় নিয়মিত ফার্নিচার পরিষ্কার করা এবং জানালা বন্ধ রাখা দরকার। শীতকালে গরম পানিতে ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা বা গরম কাপড়ের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

 হাউজকিপিংয়ে সমস্যা সমাধানের কৌশল:

 ১. প্রযুক্তি ও অটোমেশনের ব্যবহার:

বর্তমানে অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হাউজকিপিংয়ের কাজকে সহজ করে তুলেছে। ভ্যাকুয়াম রোবট, স্মার্ট হোম সিস্টেম এবং ক্লিনিং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কাজগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করা যায়। এতে সময় বাঁচে এবং কাজের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।

 ২. নিয়মিত পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ:

প্রতিটি কাজের শেষ হওয়ার পর তা পর্যালোচনা করা উচিত। কোন কাজে কীভাবে উন্নতি করা যায় এবং কোন কাজটি আরো দ্রুত বা দক্ষভাবে সম্পন্ন করা যায় তা নিয়মিত বিশ্লেষণ করা জরুরি। এতে ভবিষ্যতে কাজের সময় এবং পরিশ্রম কমানো যায়। 

 ৩. কর্মীদের প্রশিক্ষণ:

যদি প্রতিষ্ঠান বা বড় পরিবারে হাউজকিপিংয়ের জন্য কর্মী রাখা হয়, তাহলে তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণ কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তারা আরও ভালোভাবে ও দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধান পাওয়ার জন্যও প্রশিক্ষণ সহায়ক হয়।

 ৪. স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন:

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রোগ-জীবাণু কম ছড়ায়। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখা, বাতাস পরিষ্কার রাখা এবং খাবারের সরঞ্জাম সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

হাউজকিপিংয়ে চ্যালেঞ্জ থাকলেও সঠিক পরিকল্পনা, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে এটি সহজ এবং কার্যকর হতে পারে। নিয়মিত রুটিন ও সতর্কতা মেনে চলা এবং সমস্যার সমাধানে সৃজনশীল কৌশল ব্যবহার করে ঘর ও পরিবেশ পরিষ্কার রাখা সম্ভব।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর হাউজ কিপিং স্কিল লেভেল– CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রুকসানা আক্তার

আমি রুকসানা আক্তার একজন সার্টিফাইড হাউজ কিপিং প্রশিক্ষক ও এসেসর। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) কর্তৃক, স্কিল লেভেল-২,৩ ও ৪ সম্পন্ন করেছি। bdskills.org স্কিলস কন্টেন্ট প্লাটফরমে আমি শিক্ষার্থীদের জন্য হাউজ কিপিং স্কিল লেভেল সম্পর্কিত নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

হাউজ কিপিং-এ চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল

আপডেট সময় ০৩:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

হাউজ কিপিং-এ চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল

হাউজকিপিং বা গৃহপরিচর্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানকে পরিচ্ছন্ন, সুশৃঙ্খল এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন। যদিও এটি প্রতিদিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, হাউজকিপিংয়ের সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা যুক্ত রয়েছে। তবে কিছু কৌশল ব্যবহার করে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় এবং গৃহপরিচর্যার কাজটি আরও সহজ এবং কার্যকর করা সম্ভব।

 হাউজকিপিং-এর প্রধান চ্যালেঞ্জ:

 ১. সময় ব্যবস্থাপনার সমস্যা:

গৃহপরিচর্যার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময় ব্যবস্থাপনা। দিনের মধ্যে অনেক কাজ থাকতে পারে, যেমন ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া, বাসন মাজার পাশাপাশি পরিবারের অন্য কাজ। সঠিক সময় ব্যবস্থাপনার অভাবে কোনো কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে, কিংবা কাজের মান ভালো না হতে পারে।

সমাধান: 

সময় ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সুসংগঠিত রুটিন বা সময়সূচি তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহের কোন দিনে কোন কাজ করা হবে তা নির্ধারণ করে কাজ ভাগ করলে সময়ের সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব। এছাড়া, কাজগুলোকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, যেমন প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এবং তৎক্ষণাৎ কাজগুলো শেষ করা এবং পরে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা।

 ২. অপর্যাপ্ত সরঞ্জাম:

হাউজকিপিংয়ের সময় অপর্যাপ্ত বা খারাপ সরঞ্জামের কারণে কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে। যেমন, ভাঙা ঝাড়ু বা কাজ না করা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করলে কাজের মান কমে যেতে পারে এবং সময়ও বেশি লাগতে পারে।

সমাধান: 

কাজের সরঞ্জামগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং সময়মতো মেরামত বা প্রতিস্থাপন করা উচিত। ভালো মানের সরঞ্জাম কেনা এবং সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হাউজকিপিংকে অনেক সহজ করে তোলে। সরঞ্জামগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার মাধ্যমে সেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় এবং কাজ করার গতি বাড়ানো যায়।

 ৩. অগোছালো পরিবেশ:

একটি অগোছালো পরিবেশ কাজের গতি কমিয়ে দেয় এবং মানসিক চাপও বাড়ায়। কখনো কখনো সঠিকভাবে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা না হলে কাজের জায়গা সীমিত হয়ে যায়, যা কাজকে আরও কঠিন করে তোলে।

সমাধান: 

অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনকার ব্যবহৃত জিনিসগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখা উচিত। এছাড়া প্রয়োজন নেই এমন জিনিসগুলোকে ফেলে দেওয়া বা দান করা যেতে পারে। “মিনিমালিজম” বা কম জিনিসপত্র ব্যবহারের নীতি মেনে চললে অগোছালো অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিদিন কিছুটা সময় ব্যয় করে জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখলে বড় পরিস্কার করার কাজও সহজ হয়ে যায়।

 ৪. পরিচ্ছন্নতার স্থায়িত্ব:

একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান একবার পরিচ্ছন্ন করলেই দীর্ঘদিন তা পরিষ্কার থাকবে না। পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি ধারাবাহিক কাজ। পরিবারের সদস্যদের বা কর্মীদের অসতর্কতার কারণে পরিচ্ছন্নতা দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সমাধান: 

পরিচ্ছন্নতার স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সকলের সচেতনতা জরুরি। পরিবারের সদস্যদের বা কর্মীদের হাউজকিপিংয়ের নিয়ম মেনে চলতে উৎসাহিত করতে হবে। যেমন, ব্যবহার শেষে জিনিসপত্র নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, খাবারের পর বাসন ধুয়ে ফেলা, এবং ময়লা জিনিসপত্র যথাস্থানে ফেলা ইত্যাদি।

 ৫. স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার চ্যালেঞ্জ:

হাউজকিপিংয়ের সময় অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। যেমন, রাসায়নিক ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে ত্বকে সমস্যা, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি, ভারী জিনিসপত্র সরানো বা ফার্নিচার স্থানান্তরের সময় শারীরিক আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সমাধান: 

স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বজায় রাখতে নিরাপদ ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত, যেমন ইকো-ফ্রেন্ডলি ও নন-টক্সিক উপাদানসমৃদ্ধ ক্লিনিং প্রোডাক্ট। রাসায়নিক ব্যবহারের সময় গ্লাভস, মাস্ক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। ভারী জিনিস সরানোর সময় শরীরের সঠিক ভঙ্গি ব্যবহার এবং প্রয়োজনে সহায়তা নেওয়া উচিত।

 ৬. আবহাওয়া বা মৌসুমি সমস্যা:

বছরের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের আবহাওয়া সমস্যা তৈরি করে। বর্ষাকালে আর্দ্রতা, শীতকালে ধুলো এবং গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে হাউজকিপিংয়ের কাজ জটিল হতে পারে। আবহাওয়ার প্রভাব ঘরের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সমাধান: 

আবহাওয়া অনুযায়ী কাজের পদ্ধতি এবং সময় ঠিক করা উচিত। বর্ষাকালে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ধুলো মোকাবিলায় নিয়মিত ফার্নিচার পরিষ্কার করা এবং জানালা বন্ধ রাখা দরকার। শীতকালে গরম পানিতে ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা বা গরম কাপড়ের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

 হাউজকিপিংয়ে সমস্যা সমাধানের কৌশল:

 ১. প্রযুক্তি ও অটোমেশনের ব্যবহার:

বর্তমানে অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হাউজকিপিংয়ের কাজকে সহজ করে তুলেছে। ভ্যাকুয়াম রোবট, স্মার্ট হোম সিস্টেম এবং ক্লিনিং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কাজগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করা যায়। এতে সময় বাঁচে এবং কাজের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।

 ২. নিয়মিত পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ:

প্রতিটি কাজের শেষ হওয়ার পর তা পর্যালোচনা করা উচিত। কোন কাজে কীভাবে উন্নতি করা যায় এবং কোন কাজটি আরো দ্রুত বা দক্ষভাবে সম্পন্ন করা যায় তা নিয়মিত বিশ্লেষণ করা জরুরি। এতে ভবিষ্যতে কাজের সময় এবং পরিশ্রম কমানো যায়। 

 ৩. কর্মীদের প্রশিক্ষণ:

যদি প্রতিষ্ঠান বা বড় পরিবারে হাউজকিপিংয়ের জন্য কর্মী রাখা হয়, তাহলে তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণ কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তারা আরও ভালোভাবে ও দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধান পাওয়ার জন্যও প্রশিক্ষণ সহায়ক হয়।

 ৪. স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন:

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রোগ-জীবাণু কম ছড়ায়। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখা, বাতাস পরিষ্কার রাখা এবং খাবারের সরঞ্জাম সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

হাউজকিপিংয়ে চ্যালেঞ্জ থাকলেও সঠিক পরিকল্পনা, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে এটি সহজ এবং কার্যকর হতে পারে। নিয়মিত রুটিন ও সতর্কতা মেনে চলা এবং সমস্যার সমাধানে সৃজনশীল কৌশল ব্যবহার করে ঘর ও পরিবেশ পরিষ্কার রাখা সম্ভব।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর হাউজ কিপিং স্কিল লেভেল– CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি  এর ফেসবুক পেজ,  কমিউনিটি গ্রুপ  অথবা  ওয়েবসাইট ও  গ্রুপ  থেকে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন ?