০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

“ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনে লেভেল-৩: আইসিটি দক্ষতায় নতুন মানদণ্ড”

দীপঙ্কর চৌধুরী
  • আপডেট সময় ০৯:০০:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৭৯ বার পড়া হয়েছে

দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনের অবস্থান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। National Skills Development Authority (NSDA) কর্তৃক প্রকাশিত “Competency Standard for Graphic Design for Freelancing (ICT Sector) Level 3”র মানদণ্ড অনুযায়ী, লেভেল-৩ হিসেবে পরিচিত এই সার্টিফিকেশন নতুনভাবে অনেকে পায়।

এই মানদণ্ডআমূলভাবে লক্ষ্য রাখে যে, একজন গ্রাফিক ডিজাইনার শুধু সফটওয়্যার চালাতে পারবে তা নয়—তার ডিজাইন চিন্তা, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করার ধরন ও ক্লায়েন্ট সঙ্গে যোগাযোগ, এবং হাতে-কলমে কাজ তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে।

মানদণ্ডের মূল অংগ

এই লেভেল-৩ স্ট্যান্ডার্ড বেশ কিছু ইউনিট ও কার্যক্ষমতা নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে রয়েছে:

  • জেনেরিক বা সাধারণ দক্ষতা (Generic Competencies): যেমন দলবদ্ধভাবে কাজ করা, ইংরেজিতে যোগাযোগ চালানো, প্রেজেন্টেশন দেওয়া ইত্যাদি।
  • সেক্টর-নির্দিষ্ট দক্ষতা (Sector-Specific Competencies): যেমন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা, ডিজাইন সম্পর্কিত সফটওয়্যার ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার, ওয়ার্কপ্লেসে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা।
  • অকুপেশন-নির্দিষ্ট দক্ষতা (Occupation-Specific Competencies): বিশেষভাবে ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনের কাজে লাগার জন্য যেমন ভেক্টর ইমেজ তৈরি, লিফলেট, ব্রোশিওর, ব্যানার ডিজাইন, ও ডিজাইন প্রোডাকশনের জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার।

উদাহরণস্বরূপ, একটি ইউনিটে দেওয়া আছে “ভেক্টর ইমেজ তৈরি” কাজের ধরন, যেখানে পরীক্ষার্থীরকে নির্দিষ্ট আর্টবোর্ড সাইজ, রঙের মোড, সফটওয়্যার পরিচালনা, আউটপুট ফাইল সেভ করা সহ বিভিন্ন ধাপে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

কেন এই লেভেল গুরুত্বপূর্ণ?

  • দ্রুত বর্ধনশীল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
  • এই স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি “সার্টিফাইড গ্রাফিক ডিজাইনার (ফ্রিল্যান্সিং)” হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যা ক্লায়েন্ট বা মার্কেটপ্লেসে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
  • শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, মার্কেট-চাহিদা, কাজের প্রসেস, ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়েও সক্ষমতা তৈরি হয়।
  • বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎস হয়ে উঠছে, এই ধরনের সার্টিফিকেশন তরুণদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হতে পারে।

চ্যালেঞ্জ পরবর্তী পথ

যদিও স্ট্যান্ডার্ডটি ভালো হলেও, বাস্তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে — যেমন:

  • প্রশিক্ষণ ও অ্যাসেসমেন্ট-প্রদান প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।
  • ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের দ্রুত পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড আপডেট করা জরুরি।
  • ডিজাইনারদের জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার অনেক সময় বড় খরচের বিষয় হয়।
  • শুধু সার্টিফিকেট পাওয়া মানেই সব নয় — স্থায়ীভাবে কাজ ধরে রাখার জন্য মার্কেটপ্লেসে নিজেকে পরিচিত করা, ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা ইত্যাদি প্রয়োজন।

লেভেল-৩ হিসেবে স্থির করা এই স্ট্যান্ডার্ড গ্রাফিক ডিজাইনের ফ্রিল্যান্সিং পেশায় এক নতুন মাইলফলক। যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এবং সফলভাবে সার্টিফায়েড হন, তাহলে তাঁর জন্য শুধু কাজ পাওয়া সহজ হবে তাই নয়, বাজারে টেকসইভাবে কাজ করার সুযোগও বাড়বে। তবে সফলতা নিশ্চিত করতে হবে — কেবল সফটওয়্যার আয়ত্ত নয়, ক্লায়েন্টদের চাহিদা বুঝে ডিজাইন তৈরি, সময়মতো কাজ teslim, এবং নিজেদের প্রচার-প্রসার সহ।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর Graphic Design for Freelancing লেভেল-  CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি এর ফেসবুক পেজকমিউনিটি গ্রুপ অথবা ওয়েবসাইট ও গ্রুপ থেকে।

ট্যাগস :

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দীপঙ্কর চৌধুরী

আমি দীপঙ্কর চৌধুরী একজন সার্টিফাইড গ্রাফিক ডিজাইন ফর ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষক ও এসেসর। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (NSDA) কর্তৃক, স্কিল লেভেল-৩, ৫ সম্পন্ন করেছি। bdskills.org স্কিলস কন্টেন্ট প্লাটফরমে আমি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রাফিক ডিজাইন ফর ফ্রিল্যান্সিং স্কিল লেভেল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবো।

“ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনে লেভেল-৩: আইসিটি দক্ষতায় নতুন মানদণ্ড”

আপডেট সময় ০৯:০০:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনের অবস্থান ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। National Skills Development Authority (NSDA) কর্তৃক প্রকাশিত “Competency Standard for Graphic Design for Freelancing (ICT Sector) Level 3”র মানদণ্ড অনুযায়ী, লেভেল-৩ হিসেবে পরিচিত এই সার্টিফিকেশন নতুনভাবে অনেকে পায়।

এই মানদণ্ডআমূলভাবে লক্ষ্য রাখে যে, একজন গ্রাফিক ডিজাইনার শুধু সফটওয়্যার চালাতে পারবে তা নয়—তার ডিজাইন চিন্তা, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করার ধরন ও ক্লায়েন্ট সঙ্গে যোগাযোগ, এবং হাতে-কলমে কাজ তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে।

মানদণ্ডের মূল অংগ

এই লেভেল-৩ স্ট্যান্ডার্ড বেশ কিছু ইউনিট ও কার্যক্ষমতা নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে রয়েছে:

  • জেনেরিক বা সাধারণ দক্ষতা (Generic Competencies): যেমন দলবদ্ধভাবে কাজ করা, ইংরেজিতে যোগাযোগ চালানো, প্রেজেন্টেশন দেওয়া ইত্যাদি।
  • সেক্টর-নির্দিষ্ট দক্ষতা (Sector-Specific Competencies): যেমন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা, ডিজাইন সম্পর্কিত সফটওয়্যার ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার, ওয়ার্কপ্লেসে নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা।
  • অকুপেশন-নির্দিষ্ট দক্ষতা (Occupation-Specific Competencies): বিশেষভাবে ফ্রিল্যান্সিং গ্রাফিক ডিজাইনের কাজে লাগার জন্য যেমন ভেক্টর ইমেজ তৈরি, লিফলেট, ব্রোশিওর, ব্যানার ডিজাইন, ও ডিজাইন প্রোডাকশনের জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার।

উদাহরণস্বরূপ, একটি ইউনিটে দেওয়া আছে “ভেক্টর ইমেজ তৈরি” কাজের ধরন, যেখানে পরীক্ষার্থীরকে নির্দিষ্ট আর্টবোর্ড সাইজ, রঙের মোড, সফটওয়্যার পরিচালনা, আউটপুট ফাইল সেভ করা সহ বিভিন্ন ধাপে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

কেন এই লেভেল গুরুত্বপূর্ণ?

  • দ্রুত বর্ধনশীল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
  • এই স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি “সার্টিফাইড গ্রাফিক ডিজাইনার (ফ্রিল্যান্সিং)” হিসেবে স্বীকৃতি পায়, যা ক্লায়েন্ট বা মার্কেটপ্লেসে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
  • শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, মার্কেট-চাহিদা, কাজের প্রসেস, ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়েও সক্ষমতা তৈরি হয়।
  • বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎস হয়ে উঠছে, এই ধরনের সার্টিফিকেশন তরুণদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হতে পারে।

চ্যালেঞ্জ পরবর্তী পথ

যদিও স্ট্যান্ডার্ডটি ভালো হলেও, বাস্তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে — যেমন:

  • প্রশিক্ষণ ও অ্যাসেসমেন্ট-প্রদান প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।
  • ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের দ্রুত পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড আপডেট করা জরুরি।
  • ডিজাইনারদের জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার অনেক সময় বড় খরচের বিষয় হয়।
  • শুধু সার্টিফিকেট পাওয়া মানেই সব নয় — স্থায়ীভাবে কাজ ধরে রাখার জন্য মার্কেটপ্লেসে নিজেকে পরিচিত করা, ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা ইত্যাদি প্রয়োজন।

লেভেল-৩ হিসেবে স্থির করা এই স্ট্যান্ডার্ড গ্রাফিক ডিজাইনের ফ্রিল্যান্সিং পেশায় এক নতুন মাইলফলক। যদি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এবং সফলভাবে সার্টিফায়েড হন, তাহলে তাঁর জন্য শুধু কাজ পাওয়া সহজ হবে তাই নয়, বাজারে টেকসইভাবে কাজ করার সুযোগও বাড়বে। তবে সফলতা নিশ্চিত করতে হবে — কেবল সফটওয়্যার আয়ত্ত নয়, ক্লায়েন্টদের চাহিদা বুঝে ডিজাইন তৈরি, সময়মতো কাজ teslim, এবং নিজেদের প্রচার-প্রসার সহ।

➤  জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর Graphic Design for Freelancing লেভেল-  CS ডাউনলোড এর জন্য ভিজিট  করতে – ক্লিক করুন

বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে বিভিন্ন দক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মূল্যায়নের মাধ্যমে দক্ষতার লে্ভেল অনুযায়ী যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের সনদ প্রদান করা হচ্ছে। যার প্রসার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যেকোন আপডেট তথ্য পেতে ঘুরে আসতে পারেন বিডিস্কিলস.ওআরজি এর ফেসবুক পেজকমিউনিটি গ্রুপ অথবা ওয়েবসাইট ও গ্রুপ থেকে।